রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মধু মাস জৈষ্ঠ্যের শুরু থেকে বিভিন্ন এলাকায় জমে উঠেছে আমের বাজার। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশ্বে কয়েকটি স্থানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী (মৌসুম ভিক্তিক) আম আড়ৎ। প্রতিদিনেই আড়ৎ গুলোতে আসছে বাহারী বাহারী বিভিন্ন জাতের আম। গোপালভোগ, লখনা, ক্ষীরসাপাত, হিমসাগরসহ বিভিন্ন প্রজাতি আমের মিষ্টি ঘ্রাণ ভেসে আসছে আড়ৎ গুলো থেকে। ল্যাংড়া, ফজলি ও আশ্বনি আম ছাড়া বাকি স্থানীয় জাতের (আটির) আম গুলোর কেনা-বেচা ধুম পড়েছে এই অঞ্চলে।
পাখি ডাকা ভোর থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত চলে আম বেচা-কেনা। এর মধ্যে রাজশাহী জেলার সর্ববৃহৎ আমের বাজার হিসাবে পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটের সুনাম ছড়িয়ে পরেছে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। যার ফলে আড়ৎ গুলোতে আগমন ঘটছে বিভিন্ন জেলার আম ব্যবসায়ীদের। প্রতিদিন এই উপজেলায় কোটি কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হচ্ছে।
বানেশ্বর হাটের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে প্রায় আর্ধা কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী আমের বাজার। বিশাল এই হাটে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত চলছে আমের কেনা-বেচার ধুম। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে বানেশ্বর হাট এখন বিগত বছর গুলোর চেয়ে বেশি সরগরম।
এছাড়া বেলপুকুর, শাহবাজপুর, বিড়ালদহ, শিবপুরহাটসহ বিভিন্ন গ্রাম গুলোতেও সমাগম ঘটেছে অস্থায়ী আমের বাজার। আমের জাত ভেদে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত (৪৫ কেজি, ১ মণ) দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আম্রপালি ও দুধস্বর ছাড়াও প্রভৃতি মাঝারি স্বাদের আমের দামও এক থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট, নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বেশীর ভাগ আম বিক্রেতাগন আম বিক্রি করতে আসেন বানেশ্বর হাটে।
চারঘাট এলাকার বাগান মালিক সিরাজুল ইসলাম, দবির উদ্দীনসহ অনেকেই জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আম ব্যবসায়ীরা বানেশ্বর আড়ৎ গুলো থেকে আম ক্রয় করেন। যার ফলে এখানে অল্প খরচে ভালো দামে আম বিক্রি করা যায়।
আড়ৎদার আবুল কালাম ও সেলিম জানান, কোনো প্রকার দালাল ছাড়াই বানেশ্বর আম আড়ৎদারগন সঠিক মূল্যে বাগান মালিকদের নিকট থেকে সরাসরি আম ক্রয় করে থাকে। এতে আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা কেনা-বেচায় প্রতারনা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
খুলনার থেকে আসা আম ব্যবসায়ী জমশেদ আলী, ঢাকার মোতালেব হোসেনসহ বেশীর ভাগ ব্যবসায়ীরা জানান, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজশাহী অঞ্চলের আমের কদর অনেক বেশি। আর রাজশাহীর যেকোনো হাট ও আড়তের তুলনায় বানেশ্বর, শাহবাজপুর এলাকার আম ক্রয় করলে যাতায়াত খরচ অনেক কম লাগে। এতে আমাদের লাভের অংকটা একটু বেশী হয়।
বানেশ্বর বণিক সমিতির সভাপতি আজিজুল বারী মুক্তা জানান, প্রতিদিন এই আম হাট থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন আম ক্রয়-বিক্রয় করছেন। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন অর্ধ-শতাধিক আম বোঝাই ট্রাক দেশের বিভিন্নস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
এই হাটে আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরী দিয়ে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের সার্বিক সহয়তা করা হয়। তিনি আরো জানান, কেবলমাত্র বানেশ্বর বাজার থেকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হয়।