হাড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলন
১৮ মে ১৫।। হাড়িভাঙা জাতের আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আঁশবিহীন, মাংসল ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এ আমের চাহিদাও প্রচুর। মৌসুমের শুরুতেই শহরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা আম চাষিদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে আম বাগান কিনে নিচ্ছে। এতে আম চাষিদের চেয়ে লাভবান হচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় ৬ হাজারের বেশি আম চাষি ও বাগান মালিক ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছে। এপ্রিল মাসের শুরু থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় চলতি মৌসুমে আমের অধিক ফলনের আশাবাদী কৃষকরা।
রংপুরের গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হলেও সুমিষ্ট স্বাদের জন্য হাড়িভাঙা আমের কদর অনেক বেশি। এ জাতের আমের অধিক চাষ হয়ে থাকে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার পদাগঞ্জ গ্রামে। ওই গ্রামের আম চাষি শাহাজুল, হামিদুল, আনিছারসহ অনেকে জানান, এবারে আমের ফলন ভালো হলেও অধিকাংশ আম চাষি সুফল পা”েছন না।
কারণ হিসেবে তারা বলেন, শহরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জমি থেকে অগ্রিম চুক্তিভিত্তিক আম ক্রয় করছেন তারা বাড়িতে গিয়ে। এমনিভাবে শতাধিক পাইকারি আম ব্যবসায়ী নিজেদের ইচ্ছেমতো আমের মূল্য নির্ধারণ করে আগাম টাকা দিচ্ছেন। এভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির উৎপাদিত আম চলে যা”েছ পাইকারি ব্যবসায়ীদের দখলে। উৎপাদিত আম দীর্ঘদিন গাছে রাখতে পাইকাররা এক ধরনের ওষুধ স্প্রে করছেন আমগাছে। ফলে মৌসুমের শেষ দিকে এসব আম অধিকমূল্যে বিক্রি করেন পাইকাররা। এতে স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায় হাড়িভাঙা আম ক্রয়ের ক্ষমতা।
রংপুরের স্থানীয় বাজারে চলতি মৌসুমে প্রতি কেজি আমের দাম ৬০-৭০ টাকা হতে পারে। তবে কখনো কখনো বা মৌসুমের শেষ দিকে এই দাম ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ২১ হাজার টন। যার মূল্য ছিল ১৪৭ কোটি টাকা। এবারে চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ইতোমধ্যেই বাজারে বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যা”েছ। তবে জুনের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত পাওয়া যাবে হাড়িভাঙা আম। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) উপপরিচালক জুলফিকার হায়দার এবং গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুুল্লাহ আল মামুন জানান, সারা দেশে হাড়িভাঙা আমের চাহিদা ব্যাপক। তাই আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রনে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে এ আমের উৎপাদন আরো বাড়ানো সম্ভব।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) উদ্যান উপপরিচালক ও বিশেষজ্ঞ খন্দকার মেজবাহুল ইসলাম বলেন, এপ্রিল থেকে নিয়মিত বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা আমের অধিক ফলনে খুবই সহায়ক। আগামী দুমাস পর্যন্ত এ ধরনের অনুক‚ল আবহাওয়া বিরাজ করলে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
Comments
- No comments found
Leave your comments