আমে ফরমালিন রোধে কঠোর নীতিমালা দাবি
আমে ফরমালিনসহ ক্ষতিকারক অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবহার রোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োগ এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল রবিবার ডিসিসিআই এবং ইউএসএআইডি অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন প্রজেক্ট (ডিএআই) যৌথভাবে আয়োজিত ‘রাসায়নিকমুক্ত আমের উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, আমে ফরমালিনসহ ক্ষতিকারক অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবহার রোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োগ এবং এ বিষয়ে জনগণের সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আম উৎপাদন ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি দেশের কৃষি বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং ব্যবসায়ী সমাজকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মো. শোয়েব চৌধুরী বলেন, আম উৎপাদন ও পাকানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আম চাষি, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা শ্রেণি সবাই এখন অনেক সচেতন। তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আম পাকানোর জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে চেম্বার রয়েছে, যেটি আমাদের দেশে এখনো গড়ে ওঠেনি। ’ তিনি আম পাকানোর প্রক্রিয়া উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় কনসিগলিয়ারি প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক শিবাজী রায় আম চাষি এবং এ খাতের স্টেকহোল্ডারদের ওপর পরিচালিত গবেষণার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, সারা দেশের ১২ জন আম চাষি এবং এ খাতের ১৫০ জন স্টেকহোল্ডারের ওপর এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। তিনি বলেন, আম পাকানোর ক্ষেত্রে ৭৫০ পিপিএম বা এর কম মাত্রায় ইথিফম ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।
তিনি আরো বলেন, ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে ২০১৬ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ৫১০ মণ আম নষ্ট করেছে। তিনি বলেন, রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষিদের সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ প্রদান এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি আম প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য এ খাতের উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের আহ্বান জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন খান জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আম চাষি, ব্যবসায়ী এবং রপ্তানিকারকদের জন্য একটি অ্যাকশন প্ল্যান প্রস্তুত করেছে। তিনি বলেন, আম পাকানোর ক্ষেত্রে ৭৫০ পিপিএম মাত্রায় ইথিফম ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয় না।
ডিসিসিআই আহ্বায়ক মমিন উদ দৌলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মুক্ত আলোচনায় ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাধন চন্দ্র দাস, গ্রামীণফোন লিমিটেডের বিজনেস রিলেশন বিভাগের প্রধান আজিজুল আবেদীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ এইচ এম আহসান এবং বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরানুল হক পাটোয়ারী অংশগ্রহণ করেন। আলোচকরা আম রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন নতুন বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ডিসিসিআই সহসভাপতি হোসেন এ সিকদার, সমন্বয়কারী পরিচালক ইমরান আহমেদ, মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবিরসহ এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Comments
- No comments found
Leave your comments