খুলনার আমের চারা জার্মান-জাপানে যাবে
খুলনার ফুলতলা উপজেলার নার্সারিগুলোতে সাজ সাজ রব। এখানে কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। দেড় শতাধিক নার্সারি ব্যস্ত আমের চারা নিয়ে। এবার জার্মান-জাপানে খুলনার আমের চারার চাহিদা বেশি। ২০ কোটি টাকা মূল্যের চারা রফতানি হবে দেশগুলোতে। ফুলতলা উপজেলা জুড়ে নার্সারি। নার্সারিতে ফল, ফুল, বনজ ও ঔষধী গাছ ভরপুর। বর্ষা মওসুমে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ফলদ জাতীয় বৃক্ষের। আম-জাম, লিচু, জামরুল, সফেদা, কামরাঙা, আমড়া, পেয়ারা ইত্যাদি চারা পরিচর্যা হচ্ছে নার্সারিগুলোতে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উল্লেখিত দু’টি দেশে আম্রপলি, আম্রমল্লিকা, চোষা, হিমসাগর, হাইব্রিড-১০, সিন্ধু, বারী-৪, ব্যানানা, ক্যান, পালমার্ক, সূর্য্যডিম, নেংড়া, গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ জাতের চারার চাহিদা বেশি। স্থানীয় বাজারের চেয়ে দিগুণ মূল্যে এসব জাতের চারা বিদেশে বিক্রি হবে। ডি খান নার্সারি, একতা, ফাতেমা, শাপলা, সাথী, বনরাজ, হাইব্রিড, আদর্শ, রোকেয়া, খাদিজা, সরদার, সবুজ, গ্রীন নার্সারি চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে খ্যাতি অর্জন করেছে। এর মধ্যে দু-একটি জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কারও পেয়েছে।
হাউব্রিড নার্সারির মালিক সরদার আবু সাঈদ জানান, ৩০টি প্লটের ৬০ বিঘা জমিতে নানা জাতের চারা উৎপাদন হয়েছে। জ্যৈষ্ঠ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত নার্সারিগুলোতে চারা বিকিকিনির মওসুম। গেল বছর তাদের এ প্রতিষ্ঠান কোটি টাকার বেশি চারা বিক্রি করে। এ বছরও বিভিন্ন এজেন্ট ও এনজিও’র মাধ্যমে দুই লাখ চারা জার্মানী ও জাপানে বিক্রির আশা করছি। এ অঞ্চলকে ফুলে ফলে সমৃদ্ধ করতে বিদেশ থেকেও নানা জাতের ফুল ও উন্নত জাতের ফলদ গাছের নমুনাও তারা এনেছেন।
সৌখিন নার্সারির মালিক এস এম মোস্তাক জানান, ২৫ বছর আগে ২৩৫ টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি এ ব্যবসায় নেমেছেন। তখন ৮০ শতক জমির প্রতি বছরের ভাড়া ছিল মাত্র ৬০ টাকা। তা বেড়ে এখন ৪০ হাজার টাকা হয়েছে। গেল বছর বিভিন্ন জাতের ৭ লাখ টাকা মূল্যের চারা বিক্রি করেছেন। এ মওসুমে ল্যাংড়া, ফজলী, রূপালী ও হিমসাগর জাতের আম বিদেশে রফতানি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ডি খান নার্সারির মালিক খবিরুল ইসলাম খান জানান, গত ৫ এপ্রিলের কাল বৈশাখী ও শিলা বৃষ্টিতে নার্সারির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জাতের চারা ও ফল নষ্ট হয়েছে। গেল বছর এ প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ টাকা মূল্যে চারা বিক্রি করে। এবার মওসুমের আগেই প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে এবার চারার চাহিদা বাড়বে। এবার ৮ লাখ টাকা মূল্যের চারা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
Comments
- No comments found
Leave your comments