কার্বাইডে পাকানো হিমসাগর, ল্যাংড়ায় বিরক্ত! স্বাদ ফেরাবে সস্তায় ‘সরকারি আম’
মালদহ শহরের কৃষি ফার্মে ৭০ বিঘা জমির উপরে এবার প্রায় ৮০ প্রজাতির আমের ফলন হয়েছে। এতদিন গোপালভোগ, ফজলি, লক্ষ্মনভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালীর মতো আমের বাণিজ্যিক উৎপাদন হত মালদহে। গাছ পাকা এমন আমই বিক্রি হচ্ছে সরকারি স্টল থেকে। নিজস্ব চিত্র মালদহের আমের জগৎ জোড়া খ্যাতি। যদিও, এক দশক ধরে সেই সুনামে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে। কারণ হিসেবে বলা যায়, অল্প সময়ের মধ্যে বেশি মুনাফার জন্য কার্বাইড ব্যবহার করে আম পাকিয়ে বিক্রি করছেন একশ্রেণির ব্যবসায়ী। ফলে আমের স্বাদ, গন্ধ— কিছুই পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। মালদহের আমের সেই সুনাম ফের ফিরিয়ে আনতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ সাব ট্রপিকাল হর্টিকালচার। কার্বাইড এবং কীটনাশক মুক্ত আম বাজারে নিয়ে এসেছে এই গবেষণা সংস্থা। মালদহ শহরে নিজস্ব ব্র্যান্ডের আমের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছে এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান। সুলভ অথচ সুস্বাদু হওয়ায় আম বিক্রির শুরুতেই সাড়া ফেলে দিয়েছে তারা। ২০১৫ সালের অক্টোবরে মালদহে পথ চলা শুরু গবেষণা সংস্থা সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ সাব ট্রপিকাল হর্টিকালচারের।মালদহ শহরের কৃষি ফার্মে ৭০ বিঘা জমির উপরে এবার প্রায় ৮০ প্রজাতির আমের ফলন হয়েছে। এতদিন গোপালভোগ, ফজলি, লক্ষ্মনভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালীর মতো আমের বাণিজ্যিক উৎপাদন হত মালদহে। এবার সেই মালদহে কোহিনুর, রুমানি, শের-ই-খাস, রানিপসন্দ, ফসেদাপসন্দ, মধুচুসকি, মিসরিকানের মতো রকমারি আমে ভরে উঠেছে একের পর এক আম গাছ। গবেষণা সংস্থার আম বাগানে বিভিন্ন বিচিত্র প্রজাতির আম শুধু সুস্বাদু নয়, একই সঙ্গে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এইসব প্রজাতির দুর্লভ আমকেই জেলা জুড়ে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন এখানকার গবেষকরা। এর পাশাপাশি। সরাসরি গাছপাকা আম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পেরে পৌঁচ্ছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ক্রেতাদের হাতে। সংস্থার সায়েন্টিস্ট ইনচার্জ দীপক নায়েকের দাবি, মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে এই সমস্ত আম ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মালদহের বাজারে চড়া দামে আম কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতাও কম নয়। এই অবস্থায় সরকারি স্টল থেকে সুলভ মূল্যে ভাল আম কেনার সুযোগ পেয়ে অভিভূত ক্রেতারাও। প্রতিদিনই মালদহের ইন্ডোর স্টেডিয়াম চত্বরে এই আম কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। রাজ্য সরকারের উদ্যান পালন দফতর ও কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার এই যৌথ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্রেতারা। গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে মালদহের আমের সবচেয়ে বড় বিপদ কার্বাইড নামক বিষ। পরীক্ষামূলক এই উদ্যোগ সফল হলে অচিরেই আম উৎপাদনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে মালদহে। একইসঙ্গে মালদহের আমের সুনামও ফিরবে।
Comments
- No comments found
Leave your comments