বাজারে আসছে ভেজালমুক্ত আম
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও চাষি আম বা অন্যান্য ফলমূলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক প্রয়োগ করার কারণে ভোক্তাদের মধ্যে ফল খাওয়া নিয়ে এক ধরনের ভীতির সৃষ্টি হয়েছিলো।
কিন্তু এ বছর রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, রংপুর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরার আমচাষিরা আম পাকানো এবং আম সংরক্ষণে কোন ধরনের রাসায়নিক সার ও বিষ ব্যবহার করবে না বলে চ্যানেল আইকে জানান।
তারা এবছর একাত্ম হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যখন যে আম গাছ থেকে নামানোর উপযোগী হবে, ঠিক তখনই সেই আম পাড়া হবে গাছ থেকে। তাই এবার বাজারে অসময়ে আম কম দেখা গেছে। এসব আম প্রধান এলাকাগুলোতে এখন হাজার হাজার টন বিষমুক্ত আম প্রস্তুত হচ্ছে। যা অচিরেই বাজারে আসবে।
অথচ গত বছর এ নিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন চাষি ও ব্যবসায়িরা। নষ্ট হয়েছে কোটি কোটি টাকার আম। সেই তাগিদ থেকেই এবার মৌসুম শুরুর আগে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো, জুন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত আম না পাড়ার। দেশের বেশিরভাগ এলাকার খবরে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট সবাই এই নিয়ম মেনেছেন।
তাই অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার বাজারে ভেজালমুক্ত ও মানসম্মত আম বেশি পাওয়া যাওয়ার নিশ্চয়তা মিলেছে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার আম চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি ফারুক সিদ্দিকী বলেন, এ বছর আম গুটি হওয়ার সাথে সাথে জেলা প্রশাসনের সাথে আম চাষিদের একাধিক সভা হয়। তাতে সব আম চাষিকে সতর্ক করা হয় যে, আম পোক্ত না হওয়া পর্যন্ত সেই আম কোনোভাবে গাছ থেকে পাড়লে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জরিমানা করা হবে।
অসময়ে কোনো আম যেন বাজারে না উঠতে পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। অবহিত করা হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের আমের মোকামগুলোকে।
রাজশাহীর আম বাগানি শহিদুল্লাহ শেলু জানান, সবমিলে তার ৫০ বিঘা আমের বাগান রয়েছে এবার। যার কোনোটি থেকেই এখন পর্যন্ত আম নামানো হয়নি।
সরকারি ঘোষণা ও আম চাষিদের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি আগামী ৫ জুনের পরে আম পাড়া শুরু করবেন। এতে করে তার আমে কোনো ধরণের বিষাক্ত কোনো কিছু মিশিয়ে পাকানোর আর সুযোগ থাকছেনা। কারণ আম গাছ থেকে নামানোর এক দু’দিনের মধ্যেই এমনিতেই আম পেকে যাবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী অঞ্চলের আম গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, শতভাগ বিষমুক্ত আম পেতে শুধু উৎপাদক নয়, ভোক্তার সচেতনতাও খুব বেশি দরকার। দরকার কোন আম কখন খাবেন সেটি বেশি জানা। যাতে আম ক্রয়ে ঠকার সম্ভাবনা আর না থাকে।
তার মতে, গোবিন্দভোগ ২৫ মের পর, গুলাবখাস ৩০ মের পর, গোপালভোগ ১ জুনের পর, রানিপছন্দ ৫ জুনের পর, হিমসাগর বা ক্ষীরসাপাত ১২ জুনের পর, ল্যাংড়া ১৫ জুনের পর, লক্ষণভোগ ২০ জুনের পর, হাড়িভাঙ্গা ২০ জুনের পর, আম্রপালি ১ জুলাই থেকে, মল্লিকা ১ জুলাই থেকে, ফজলি ৭ জুলাই থেকে, আশ্বিনা ২৫ জুলাই থেকে এবং বারি-৪ মধ্য জুলাই-এ পুষ্ট হয়।
Comments
- No comments found
Leave your comments