আমের বীজ ব্যবস্থাপনা
সাধারনত বেশিরভাগ আমের জাত একবীজপত্রী হয় , তবে কিছু জাত বহুবীজপত্রীও হয়ে থাকে। আমগাছে অধিক বৈচিত্রের জন্য অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করার সুপারিশ করা হয়।
অঙ্গজ জননের কিছু পদ্ধতি
জোড় কলমঃ
জোড় কলমে তিন মাস থেকে তিন বছরের আঁটির চারা ব্যবহার করা যেতে পারে। চারা এক বছরের হলে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিকে মূল শিকড় কেটে দিতে হবে। ১৫-২০ দিন পরে ওই চারাগাছ মাটির টবে (২০ X ১৫ X ১০ সেমি) তুলে রাখতে হবে। আরও ১৫-২০ দিন পরে এই চারা ভাল জাতের গাছের সমান মোটা ডালের সাথে জোড় কলম বাঁধতে হবে।
আঁটির চারা এবং ভাল জাতের গাছের ডালে ৬-৮ সেমি পরিমান লম্বা এবং ১/৩ অংশ গভীর করে কেটে কাটা অংশ মুখোমুখি জুড়ে ভাল করে সুতলি দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে যতদিন অবধি ভাল করে জোড়া না লাগে। মাটির কাছাকাছি প্রয়োজনমত শাখা না পেলে অনেক সময় টবগুলিকে উঁচুতে তোলার জন্য মাচা বানাতে হয় এবং কখনও কখনও টবে জল সেচ করার দরকার হয়। ২-৩ মাস পরে চারাগাছটির মাথার দিক ও ভাল জাতের ডালটির গোড়ার দিকে কেটে ফেলে নামিয়ে আনতে হবে। তারপর গাছটি ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখতে হবে।
ভিনিয়ার কলমঃ
এই পদ্ধতিতে ১ বছরের আঁটির চারাতে ৩-৪ মাসের ভাল জাতের গাছের প্রান্তিক ডাল জোড়া দেওয়া হয়। আঁটির গাছ এবং ভাল জাতের গাছের নির্বাচিত ডাল (সায়ন) ১৫-২০ সেমি লম্বা, সম পরিধি বিশিষ্ট এবং পেন্সিলের মত মোটা হওয়া উচিত। চারা গাছ এবং ভাল গাছের নির্বাচিত ডালে ৪-৫ সেমি লম্বা এবং ২/৫ অংশ গভীর করে কেটে মুখোমুখি জুড়ে এলকাথেন (২০০ গেজ কাগজের ১.৫ সেমি চওড়া ফিতে) দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। ৩-৪ সপ্তাহ বাদে ভাল জাতের যে ডালটি লাগানো হয়েছে তাতে কচি পাতা বের হলে, আঁটির গাছের ডগাটিকে জোড়ার ৫ সেমি উপর থেকে কেটে ফেলতে হবে।
জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় মাস এই ধরনের কলম করার ভাল সময়।
আঁটি কলমঃ
আঁটি কলম দুই পদ্ধতিতে করা যায়-
১) আঁটি থেকে আনুমানিক ৩-৪ সেমি উপরে চারার মাথাটি কেটে বাদ দিতে হবে। তারপর একটি ধারালো ছুরি দিয়ে চারার কাটা দিক থেকে আঁটির দিকে লম্বালম্বি ২-৩ সেমি চিরে দিতে হবে। এবার ভাল জাতের নির্বাচিত ডালটিকে দুপাশ থেকে ২-৩ সেমি লম্বা তির্যকভাবে কেটে চারার চেরা অংশ বসিয়ে, ১.৫ সেমি চওড়া এলকাথেন কাগজ দিয়ে ভাল ভাবে বেঁধে দিতে হবে যাতে কোন ফাঁক না থাকে বা জল প্রবেশ না করতে পারে।
২) চারাটিকে আঁটির উপর থেকে আনুমানিক ৩-৫ সেমি লম্বা তির্যকভাবে কেটে মাথার অংশ বাদ দিতে হবে। বাঞ্ছিত ভাল জাতের ডালটিকেও অনুরূপভাবে কাটতে হবে যাতে চারার কাটা অংশের উপর সঠিকভাবে বসান যায়। এবার কাটা অংশ দুটি মুখোমুখি জুড়ে ১.৫ সেমি চওড়া এলকাথেন কাগজ দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।
এছাড়াও চোখ কলম, মুকুট কলম, গুটি কলম প্রভৃতি পদ্ধতিতে আমের কলম তৈরী করা যায়।
রোপন পদ্ধতি
(১) বর্গাকার।
(২) আয়তক্ষেত্র।
(৩) পঞ্চভুজ।
(৪) ষড়ভুজ।
(৫) চিত্রাকার।
রোপনের সময়
জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
রোপনের দুরত্ব
সাধারনত ১১ মিটার X ১১ মিটার এবং সংকর জাতের ক্ষেত্রে ৩ মিটার X ৩ মিটার।
গর্তের পরিমাপ
১ মিটার X ১ মিটার X ১ মিটার
গাছের সংখ্যা /একর
৩৩ গাছ / একর ( ১১ মিটার X ১১ মিটার )
Comments
- No comments found
Leave your comments